Memory Management (CHAPTER 7) / মেমোরি ম্যানেজমেন্ট

 মেমোরি ম্যানেজমেন্ট (Memory Management)


মেমোরি ম্যানেজমেন্ট হল একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কার্যকলাপ যা অপারেটিং সিস্টেমের কাজের একটি মৌলিক অংশ। এটি মেমোরির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করে, যাতে বিভিন্ন প্রোগ্রাম এবং প্রসেসগুলি তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী পর্যাপ্ত মেমোরি পেতে পারে। নিচে মেমোরি ম্যানেজমেন্টের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হল:

১. মেমোরির গুরুত্ব:

  • মেমোরি হল কম্পিউটারের একটি মূল উপাদান যা ডেটা এবং প্রোগ্রাম সঞ্চয় করে রাখে।
  • একটি কার্যকরী অপারেটিং সিস্টেমের জন্য মেমোরির সঠিক ব্যবহার অপরিহার্য, কারণ এটি প্রসেসের কার্যকারিতা ও কার্যক্রমকে প্রভাবিত করে।

২. মেমোরি ম্যানেজমেন্টের কাজ:

  • মেমোরি বরাদ্দ (Allocation): বিভিন্ন প্রসেসের জন্য মেমোরির বরাদ্দ করা। এটি বিভিন্ন স্ট্রাটেজির মাধ্যমে হতে পারে যেমন স্ট্যাটিক বা ডYNAMIC বরাদ্দ।
  • মেমোরি মুক্ত করা (Deallocation): যখন একটি প্রসেস কাজ শেষ করে, তখন তার জন্য বরাদ্দকৃত মেমোরি মুক্ত করা হয় যাতে তা অন্য প্রসেস দ্বারা ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • মেমোরির পর্যবেক্ষণ (Monitoring): মেমোরির ব্যবহার এবং অব্যবহৃত স্থান পর্যবেক্ষণ করা।

৩. মেমোরি ব্যবস্থাপনার কৌশল:

  • ব্লক বরাদ্দ (Block Allocation): মেমোরিকে বিভিন্ন ব্লকে ভাগ করা হয় এবং প্রতিটি ব্লক একটি নির্দিষ্ট প্রসেসের জন্য বরাদ্দ করা হয়।
  • পেজিং (Paging): মেমোরিকে সমান আকারের পেজে বিভক্ত করা হয় এবং প্রোগ্রামগুলো বিভিন্ন পেজে রাখা হয়। এটি মেমোরির ব্যবহারকে আরও কার্যকর করে।
  • সেগমেন্টেশন (Segmentation): এটি প্রোগ্রামের লজিকাল বিভাগকে একটি বা একাধিক সেগমেন্টে বিভক্ত করে, যা ব্যবস্থাপনা সহজ করে।

৪. মেমোরির সমস্যাসমূহ:

  • ফ্র্যাগমেন্টেশন (Fragmentation): মেমোরির ব্যবহার অকার্যকর হতে পারে, যেখানে ব্যবহৃত এবং অব্যবহৃত স্থানগুলি ছড়িয়ে পড়ে।
  • ডেডলক (Deadlock): দুটি বা তার বেশি প্রসেস একে অপরের জন্য মেমোরি মুক্ত করতে অপেক্ষা করলে ডেডলক তৈরি হতে পারে।

৫. সিস্টেমের পারফরম্যান্স:

মেমোরি ম্যানেজমেন্টের দক্ষতা সরাসরি সিস্টেমের পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করে। সঠিকভাবে পরিচালিত মেমোরি ব্যবস্থাপনা সিস্টেমের গতি বাড়ায় এবং প্রসেসগুলির কার্যকারিতা উন্নত করে।

মেমোরি ম্যানেজমেন্ট অপারেটিং সিস্টেমের একটি অপরিহার্য দিক, যা সিস্টেমের পারফরম্যান্স, নিরাপত্তা এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত করে। এটি বিভিন্ন কৌশল ও পদ্ধতির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, যা কম্পিউটার সিস্টেমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক মেমোরি ম্যানেজমেন্ট প্রযুক্তি এবং কৌশলগুলি সমসাময়িক কম্পিউটার প্রযুক্তির উন্নতির মূল চাবিকাঠি।

মেমোরি হায়ারার্কি এবং অ্যাড্রেস বাইন্ডিং

মেমোরি হায়ারার্কি

কম্পিউটার সিস্টেমে মেমোরি হায়ারার্কি হলো একটি সাংগঠনিক কাঠামো যা বিভিন্ন ধরনের মেমোরি ডিভাইসকে স্তরবদ্ধ করে। এটি প্রোগ্রাম এবং ডেটা দ্রুত এবং কার্যকরভাবে অ্যাক্সেস করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। মেমোরি হায়ারার্কিতে সাধারণত নিম্নলিখিত স্তরগুলো থাকে:

1.   রেজিস্টার: এটি CPU-এর অভ্যন্তরে অবস্থিত সবচেয়ে দ্রুত মেমোরি। রেজিস্টারগুলো প্রোগ্রামের চলমান ডেটা এবং নির্দেশাবলীর জন্য ব্যবহৃত হয়।

2.   ক্যাশ মেমোরি: এটি CPU-এর সাথে সংযুক্ত দ্রুত মেমোরি, যা প্রায়ই ব্যবহৃত ডেটা এবং নির্দেশাবলীর একটি কপি ধারণ করে। ক্যাশ মেমোরির স্তর সাধারণত L1, L2, এবং L3 ক্যাশে হিসেবে বিভক্ত হয়, যেখানে L1 ক্যাশ সবচেয়ে দ্রুত এবং ছোট।

3.   প্রধান মেমোরি (RAM): এটি প্রধান সিস্টেম মেমোরি যেখানে প্রোগ্রাম এবং তাদের ডেটা রান করার সময় রাখা হয়। RAM মেমোরি ক্যাশ এবং স্টোরেজ ডিভাইসের মধ্যে একটি মধ্যবর্তী স্তর হিসেবে কাজ করে।

4.   সেকেন্ডারি স্টোরেজ: এটি হার্ড ড্রাইভ, SSD বা অন্যান্য স্টোরেজ ডিভাইস, যেখানে ডেটা দীর্ঘকাল ধরে সংরক্ষণ করা হয়। সেকেন্ডারি স্টোরেজের অ্যাক্সেস গতিতে তুলনামূলকভাবে ধীর।

মেমোরি হায়ারার্কির লক্ষ্য হলো উচ্চ গতির অ্যাক্সেসের জন্য সবচেয়ে ব্যবহৃত ডেটাকে দ্রুত উপলব্ধ করা, কম্পিউটার সিস্টেমের সামগ্রিক কর্মক্ষমতা উন্নত করা।

অ্যাড্রেস বাইন্ডিং

অ্যাড্রেস বাইন্ডিং হলো একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে লজিক্যাল অ্যাড্রেস (যা প্রোগ্রাম দ্বারা ব্যবহৃত হয়) এবং ফিজিক্যাল অ্যাড্রেস (যা মেমোরিতে আসল অবস্থান) এর মধ্যে একটি সম্পর্ক স্থাপন করা হয়। এটি সাধারণত তিনটি স্তরে ঘটে:

1.   কম্পাইলার সময় (Compile Time): যখন প্রোগ্রামটি কম্পাইল করা হয়, তখন লজিক্যাল অ্যাড্রেসগুলি ফিজিক্যাল অ্যাড্রেসে রূপান্তরিত করা হয়। এই সময়ে যদি প্রোগ্রামের লোডিং অবস্থান পূর্বনির্ধারিত হয়, তাহলে এটি সবচেয়ে কার্যকর।

2.   লিংকিং সময় (Link Time): যখন একটি প্রোগ্রাম বিভিন্ন মডিউলে বিভক্ত হয়, তখন লিঙ্কার এই মডিউলগুলিকে একত্রিত করে এবং লজিক্যাল অ্যাড্রেসগুলিকে ফিজিক্যাল অ্যাড্রেসে রূপান্তরিত করে। এখানে, প্রোগ্রামটির লোডিং অবস্থান জানা নেই।

3.   রান-টাইম (Run Time): যখন প্রোগ্রামটি রান হচ্ছে, তখন অপারেটিং সিস্টেম এটি পরিবর্তন করতে পারে। এই অবস্থায়, একটি অ্যাড্রেস ট্রান্সলেশন প্রক্রিয়া ব্যবহার করা হয়, যা সাধারণত পেজিং বা সেগমেন্টেশন দ্বারা পরিচালিত হয়।

অ্যাড্রেস বাইন্ডিং এর মাধ্যমে, প্রোগ্রামগুলি আরও স্থিতিশীল এবং নিরাপদ হয়ে ওঠে কারণ এটি বিভিন্ন অ্যাড্রেসের মধ্যে সংঘর্ষ এড়াতে সহায়তা করে।

মেমোরি হায়ারার্কি এবং অ্যাড্রেস বাইন্ডিং উভয়ই একটি কার্যকর এবং দক্ষ কম্পিউটার সিস্টেমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলি নিশ্চিত করে যে ডেটা এবং নির্দেশাবলী দ্রুত এবং নির্ভরযোগ্যভাবে অ্যাক্সেস করা যায়, ফলে সিস্টেমের সামগ্রিক কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।

সোয়াপিং (Swapping)

সোয়াপিং হল একটি প্রক্রিয়া যা অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রোগ্রাম এবং ডেটা এক্সেকিউশনের সময় ব্যবহৃত হয়। এই প্রক্রিয়ায়, একটি প্রোগ্রাম বা প্রসেসের সমস্ত বা কিছু অংশকে মেমরি থেকে ডিস্কে স্থানান্তরিত করা হয়। যখন প্রোগ্রামটি আবার চালানোর প্রয়োজন হয়, তখন এটি ডিস্ক থেকে আবার মেমরিতে ফেরত আনা হয়। সোয়াপিং ব্যবহার করা হয় যখন মেমরির ধারণক্ষমতা সীমিত এবং একাধিক প্রোগ্রামকে চালানোর জন্য পর্যাপ্ত স্থান নেই।

উদ্দেশ্য:

  • মেমরি ব্যবস্থাপনার উন্নতি করা।
  • কম্পিউটারের কাজের গতি বৃদ্ধি করা।

লাভ:

  • একাধিক প্রোগ্রাম একসাথে চালানোর সুবিধা।
  • প্রোগ্রামের কার্যকারিতা এবং সম্পদের ব্যবহার বাড়ানো।

অপকারিতা:

  • ডিস্কের গতির কারণে প্রোগ্রামটি চালাতে সময় বেশি লাগতে পারে।
  • ডিস্কে স্থানান্তরিত হওয়ার কারণে প্রোগ্রামের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে।

পেজিং (Paging)

পেজিং একটি মেমরি ব্যবস্থাপনার প্রযুক্তি যা প্রোগ্রামগুলিকে ছোট ছোট অংশ (পেজ) এ বিভক্ত করে। এটি ভৌত মেমরি এবং লজিক্যাল মেমরির মধ্যে একটি মানচিত্র তৈরি করে, যা সহজে তথ্য প্রক্রিয়াকরণের অনুমতি দেয়। পেজিংয়ের মাধ্যমে প্রোগ্রামগুলির অংশগুলি সঠিকভাবে মেমরিতে লোড করা হয় এবং যদি প্রোগ্রামের অংশগুলির প্রয়োজন হয়, তবে সেগুলি পেজ টেবিলের মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যায়।

বৈশিষ্ট্য:

  • পেজ সাইজ নির্দিষ্ট করা হয়।
  • পেজ টেবিল ব্যবহার করে লজিক্যাল এবং ভৌত মেমরি মেলানো হয়।

লাভ:

  • মেমরি ফ্রেগমেন্টেশন হ্রাস পায়।
  • সহজে বিভিন্ন প্রোগ্রাম একসাথে পরিচালনা করা যায়।

অপকারিতা:

  • পেজ টেবিলের জন্য অতিরিক্ত মেমরির প্রয়োজন।
  • পেজ ফল্ট হওয়ার সময় পারফরম্যান্স কমে যেতে পারে।

সেগমেন্টেশন (Segmentation)

সেগমেন্টেশনও একটি মেমরি ব্যবস্থাপনার পদ্ধতি, তবে এটি পেজিংয়ের তুলনায় ভিন্ন। এই পদ্ধতিতে, প্রোগ্রামটি বিভিন্ন অংশ বা সেগমেন্টে বিভক্ত করা হয়, যা প্রতিটি সেগমেন্টের জন্য আলাদা লজিক্যাল অ্যাড্রেসিং ব্যবহৃত হয়। সেগমেন্টগুলি বিভিন্ন আকারের হতে পারে এবং প্রতিটি সেগমেন্টের জন্য একটি সেগমেন্ট টেবিল থাকে।

বৈশিষ্ট্য:

  • প্রোগ্রামের লজিক্যাল কাঠামো অনুযায়ী সেগমেন্টগুলি তৈরি হয়।
  • ডাটা এবং কোড সেগমেন্ট আলাদা করা হয়।

লাভ:

  • প্রোগ্রামের কাঠামো এবং ব্যবহারকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে প্রোগ্রামের সংগঠন উন্নত হয়।
  • প্রোগ্রামের বিভিন্ন অংশগুলির মধ্যে সহজে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়।

অপকারিতা:

  • সেগমেন্টেশন ফ্রেগমেন্টেশন সমস্যা তৈরি করতে পারে।
  • সেগমেন্ট টেবিলের কারণে অতিরিক্ত মেমরি খরচ হতে পারে।

সোয়াপিং, পেজিং, এবং সেগমেন্টেশন হল অপারেটিং সিস্টেমের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এগুলি বিভিন্ন প্রোগ্রাম এবং ডেটার ব্যবস্থাপনা ও কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়ক। প্রতিটি পদ্ধতির নিজস্ব সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে, এবং এগুলির কার্যকারিতা সঠিকভাবে বুঝতে পারলে অপারেটিং সিস্টেমের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব।

 

ভার্চুয়াল মেমোরি: ডিমান্ড পেজিং, পেজ রিপ্লেসমেন্ট অ্যালগরিদম (FIFO, LRU, অপটিমাল)

ভার্চুয়াল মেমোরি

ভার্চুয়াল মেমোরি হল একটি প্রযুক্তি যা কম্পিউটারের মেমোরি ব্যবস্থাপনাকে উন্নত করে। এটি মূলত অপারেটিং সিস্টেমের একটি ফিচার যা কম্পিউটারের RAM-এর পরিমাণের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করতে সাহায্য করে। ভার্চুয়াল মেমোরির মাধ্যমে, কম্পিউটার বৃহত্তর মেমোরি স্পেস ব্যবহার করতে পারে, যা ডিস্ক স্পেসের একটি অংশকে RAM-এর মতো ব্যবহার করে।

ডিমান্ড পেজিং

ডিমান্ড পেজিং হল ভার্চুয়াল মেমোরির একটি পদ্ধতি যা তখনই একটি পেজকে RAM-এ লোড করে যখন সেটি প্রয়োজন হয়। এর ফলে মেমোরি ব্যবহারের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। যখন একটি প্রোগ্রাম কার্যকরী হয় এবং কোন পেজের প্রয়োজন হয়, তখন সেটি RAM-এ লোড করা হয়। যদি RAM পূর্ণ হয়ে যায় এবং নতুন পেজ লোড করতে হয়, তবে একটি বিদ্যমান পেজকে রিপ্লেস করা হয়।

পেজ রিপ্লেসমেন্ট অ্যালগরিদম

যখন RAM-এ পর্যাপ্ত স্থান নেই, তখন একটি নতুন পেজ লোড করার জন্য একটি বিদ্যমান পেজকে প্রতিস্থাপন করতে হয়। এই প্রক্রিয়াটি সম্পাদন করার জন্য বিভিন্ন পেজ রিপ্লেসমেন্ট অ্যালগরিদম ব্যবহার করা হয়। এখানে কিছু পরিচিত অ্যালগরিদম আলোচনা করা হল:

১. FIFO (First-In-First-Out)

FIFO অ্যালগরিদম অনুযায়ী, সবচেয়ে পুরনো পেজটি প্রথমে প্রতিস্থাপন করা হয়। অর্থাৎ, যে পেজটি RAM-এ প্রথমে এসেছে, সেটিই প্রথমে বের করা হয়। এই অ্যালগরিদমের সহজতা আছে, তবে এটি সর্বদা কার্যকরী নাও হতে পারে, কারণ কখনো কখনো পুরনো পেজগুলি আরো প্রয়োজনীয় হতে পারে।

২. LRU (Least Recently Used)

LRU অ্যালগরিদম অনুযায়ী, যে পেজটি সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার হয়নি, সেটিই প্রতিস্থাপন করা হয়। এই পদ্ধতিটি ব্যবহারকারীর কার্যকলাপের উপর ভিত্তি করে পেজের ব্যবহারের একটি ট্র্যাক রাখে এবং সবচেয়ে কম ব্যবহৃত পেজকে সরিয়ে দেয়। এটি সাধারণত FIFO-এর চেয়ে অধিক কার্যকরী, কারণ এটি ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে পেজগুলিকে চিহ্নিত করে।

৩. অপটিমাল (Optimal)

অপটিমাল পেজ রিপ্লেসমেন্ট অ্যালগরিদম একটি তাত্ত্বিক পদ্ধতি যা ভবিষ্যতে কোন পেজগুলি ব্যবহার করা হবে তা পূর্বাভাস করে। এটি সেই পেজটিকে সরিয়ে দেয় যা সবচেয়ে দূরে ব্যবহৃত হবে। যদিও এটি সঠিক ফলাফল দেয়, বাস্তবায়নে এটি অত্যন্ত কঠিন, কারণ ভবিষ্যতের তথ্য জানা সম্ভব নয়।

ভার্চুয়াল মেমোরি এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট ডিমান্ড পেজিং এবং পেজ রিপ্লেসমেন্ট অ্যালগরিদমগুলি কম্পিউটার সিস্টেমের মেমোরি ব্যবস্থাপনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সঠিক অ্যালগরিদম নির্বাচন করার মাধ্যমে, সিস্টেমের কর্মক্ষমতা এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করা যায়।

থ্রাশিং (Thrashing) - অপারেটিং সিস্টেমে

থ্রাশিং হল একটি অবস্থা যেখানে একটি কম্পিউটার সিস্টেম অতিরিক্ত পৃষ্ঠা বদলানোর কারণে কার্যকরীভাবে কাজ করতে অক্ষম হয়। এটি সাধারণত তখন ঘটে যখন মেমরির উপলব্ধ স্থান খুবই কম থাকে এবং কম্পিউটার একাধিক প্রক্রিয়া পরিচালনা করার চেষ্টা করে।

থ্রাশিংয়ের কারণসমূহ:

1.   মেমরি অভাব: যখন একটি সিস্টেমে চালিত প্রক্রিয়াগুলির সংখ্যা মেমরির সীমার বাইরে চলে যায়, তখন পৃষ্ঠাগুলি বদলানো শুরু হয়।

2.   প্রক্রিয়া ব্যবস্থাপনা: যদি সিস্টেমটি একাধিক বড় প্রক্রিয়া চালানোর চেষ্টা করে, তাহলে এটি থ্রাশিংয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

3.   অপ্রয়োজনীয় পৃষ্ঠা: কখনও কখনও, কিছু পৃষ্ঠা বা ডেটা অপর্যাপ্ত বা অপ্রয়োজনীয়ভাবে ব্যবহৃত হয়, যা মেমরি ব্যবহার বাড়ায়।

থ্রাশিংয়ের প্রভাব:

  • প্রদর্শন হ্রাস: সিস্টেমের গতি কমে যায় এবং কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়।
  • জবাবদিহিতা: ব্যবহারকারী বা প্রক্রিয়াগুলির প্রতি সিস্টেমের প্রতিক্রিয়া ধীর হয়ে যায়।
  • রিসোর্স অপচয়: CPU এবং মেমরির রিসোর্সগুলি অকার্যকরভাবে ব্যবহার হতে থাকে।

থ্রাশিং প্রতিরোধের উপায়:

1.   প্রক্রিয়া সীমিত করা: এক সময়ে চলমান প্রক্রিয়ার সংখ্যা কমানো।

2.   মেমরি পরিচালনা কৌশল: ভারসাম্য বজায় রাখতে সঠিক পৃষ্ঠা প্রতিস্থাপন কৌশল নির্বাচন করা।

3.   শ্রেণীবদ্ধ পৃষ্ঠাগুলির ব্যবহারের উন্নতি: অপ্রয়োজনীয় পৃষ্ঠা বা ডেটা কমিয়ে ফেলা।

থ্রাশিং অপারেটিং সিস্টেমের জন্য একটি সংকটজনক অবস্থা, যা সিস্টেমের কার্যকারিতা এবং প্রতিক্রিয়া প্রভাবিত করে। থ্রাশিংয়ের ফলে সৃষ্ট সমস্যাগুলি সমাধান করতে যথাযথ কৌশল এবং সম্পদের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই বিষয়টিকে বোঝার জন্য একটি শক্তিশালী অপারেটিং সিস্টেম ডিজাইন করা এবং মেমরি ব্যবস্থাপনা কৌশলগুলি উন্নত করা অপরিহার্য।

 

নিচে অপারেটিং সিস্টেমে মেমরি অ্যালোকেশন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো: কন্টিগিউয়াস অ্যালোকেশন, নন-কন্টিগিউয়াস অ্যালোকেশন, পেজিং এবং সেগমেন্টেশন।

১. কন্টিগিউয়াস অ্যালোকেশন (Contiguous Allocation)

কন্টিগিউয়াস অ্যালোকেশনে, মেমরি একটানা ব্লকে বরাদ্দ করা হয়। এটি সাধারণত সিম্পল এবং কার্যকর হয়। এখানে, প্রোগ্রাম বা ডেটা একটি নির্দিষ্ট সীমানার মধ্যে মেমরির একটি নির্দিষ্ট অংশে সঞ্চিত হয়।

বৈশিষ্ট্য:

  • সাধারণ ব্যবহার: এটি সাধারণত ছোট প্রোগ্রামের জন্য উপযুক্ত।
  • গতি: দ্রুত অ্যাক্সেস পাওয়া যায় কারণ সমস্ত তথ্য একসাথে সঞ্চিত হয়।
  • ব্যালেন্স: যদি প্রোগ্রামটি বড় হয় এবং এটি মেমরি ব্লকে ফিট না করে, তবে এটি কাজ করবে না।

অসুবিধা:

  • ফ্রাগমেন্টেশন: সময়ের সাথে সাথে মেমরিতে খালি জায়গা সৃষ্টি হতে পারে, যা পুনরায় বরাদ্দের সময় সমস্যা সৃষ্টি করে।
  • অথরাইজেশন: একটি প্রোগ্রাম বড় হলে মেমরি বরাদ্দ করা কঠিন হতে পারে।

২. নন-কন্টিগিউয়াস অ্যালোকেশন (Non-Contiguous Allocation)

নন-কন্টিগিউয়াস অ্যালোকেশনে, মেমরি একটানা ব্লকে বরাদ্দ করা হয় না। এটি মেমরির বিভিন্ন অংশে প্রোগ্রাম এবং ডেটা সংরক্ষণের অনুমতি দেয়।

বৈশিষ্ট্য:

  • ফ্লেক্সিবিলিটি: এই পদ্ধতিতে মেমরি ব্যবহার করতে সুবিধা হয়।
  • ফ্রাগমেন্টেশন সমস্যা কম: কারণ, এটি বিভিন্ন স্থানে ডেটা সংরক্ষণ করতে পারে।

অসুবিধা:

  • কম গতি: মেমরি বিভিন্ন স্থানে থাকতে পারে, ফলে অ্যাক্সেস সময় বাড়তে পারে।
  • জটিলতা: মেমরি পরিচালনার জন্য জটিল এলগরিদমের প্রয়োজন।

৩. পেজিং (Paging)

পেজিং হল একটি মেমরি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি যেখানে একটি প্রোগ্রামকে ছোট, সমান আকারের ব্লকে ভাগ করা হয়, যা "পেজ" বলা হয়। এটি কন্টিগিউয়াস মেমরি বরাদ্দের সমস্যা সমাধান করে।

বৈশিষ্ট্য:

  • শারীরিক ও যৌক্তিক মেমরি: পেজিং প্রোগ্রামের যৌক্তিক মেমরিকে শারীরিক মেমরিতে ম্যাপ করে।
  • সাধারণ পেজ সাইজ: সাধারণত 4KB বা 8KB

অসুবিধা:

  • পেজ টেবিল: পেজ টেবিল পরিচালনা করতে হয়, যা অতিরিক্ত মেমরি ব্যবহার করতে পারে।
  • পেজ ফ্রাগমেন্টেশন: পেজিংয়ের মাধ্যমে কিছু অংশ ফাঁকা থাকতে পারে, যা ফ্রাগমেন্টেশন সৃষ্টি করতে পারে।

৪. সেগমেন্টেশন (Segmentation)

সেগমেন্টেশন একটি মেমরি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি যেখানে প্রোগ্রামটি বিভিন্ন লজিক্যাল অংশে বিভক্ত হয়, প্রতিটি অংশ "সেগমেন্ট" বলা হয়।

বৈশিষ্ট্য:

  • লজিক্যাল ভিউ: এটি প্রোগ্রামের লজিক্যাল কাঠামোকে প্রতিফলিত করে।
  • বৈশিষ্ট্যযুক্ত সেগমেন্ট: প্রতিটি সেগমেন্টের একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য থাকতে পারে, যেমন কোড, ডেটা ইত্যাদি।

অসুবিধা:

  • ফ্রাগমেন্টেশন: কন্টিগিউয়াস বরাদ্দের কারণে এটি ফ্রাগমেন্টেশন সৃষ্টি করতে পারে।
  • জটিলতা: সেগমেন্ট টেবিল পরিচালনার জন্য জটিল এলগরিদম প্রয়োজন।

মেমরি অ্যালোকেশন অপারেটিং সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। কন্টিগিউয়াস এবং নন-কন্টিগিউয়াস অ্যালোকেশন, পেজিং এবং সেগমেন্টেশন প্রতিটি পদ্ধতির নিজস্ব সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে। কার্যকর মেমরি ব্যবস্থাপনার জন্য এই পদ্ধতিগুলোর সঠিক ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 



 



 

Comments