Operating System Structures (CHAPTER 2) / অপারেটিং সিস্টেমের গঠন
অপারেটিং সিস্টেমের গঠন
অপারেটিং সিস্টেমের গঠন বা স্ট্রাকচার (Operating System Structures) কম্পিউটারের বিভিন্ন উপাদান এবং কার্যপ্রণালীর সুষ্ঠু পরিচালনা নিশ্চিত করে। এটি একটি অপারেটিং সিস্টেমকে সংগঠিত ও কার্যকরী করার জন্য বিভিন্ন উপাদান নিয়ে কাজ করে। নিচে অপারেটিং সিস্টেমের প্রধান কিছু গঠন বা স্ট্রাকচারের বিবরণ দেওয়া হলো:
১. সিস্টেম কল (System Call):
সিস্টেম কল হল প্রোগ্রাম ও অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম। এটি ব্যবহারকারীর প্রোগ্রামকে হার্ডওয়্যার সংক্রান্ত কার্য পরিচালনা করার অনুমতি দেয়, যেমন ফাইল ম্যানেজমেন্ট, মেমরি ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি। সিস্টেম কলের মাধ্যমে ব্যবহারকারী সরাসরি হার্ডওয়্যারের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করতে পারে না, কিন্তু অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে এটি সম্ভব হয়।
২. সিস্টেম প্রোগ্রাম (System Program):
সিস্টেম প্রোগ্রামগুলি হল বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার, যা অপারেটিং সিস্টেমের সাথে সম্পর্কিত কাজ করে। এগুলি অপারেটিং সিস্টেমের জন্য বিভিন্ন সার্ভিস বা সুবিধা প্রদান করে, যেমন ফাইল ম্যানেজমেন্ট, ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি।
৩. কর্নেল (Kernel):
কর্নেল হল অপারেটিং সিস্টেমের মূল অংশ। এটি সরাসরি হার্ডওয়্যারের সাথে কাজ করে এবং মেমরি, প্রসেসর এবং অন্যান্য ডিভাইসগুলি পরিচালনা করে। কর্নেল মূলত ব্যবহারকারীর প্রোগ্রাম এবং হার্ডওয়্যারের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে।
৪. শেল (Shell):
শেল হল ব্যবহারকারীর ইন্টারফেস, যা ব্যবহারকারী এবং অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে যোগাযোগ ঘটায়। এটি ব্যবহারকারী থেকে ইনপুট নিয়ে সেগুলিকে সিস্টেম কল বা প্রোগ্রাম হিসেবে প্রক্রিয়া করে এবং আউটপুট প্রদান করে। শেল দুই প্রকারের হয়: কমান্ড-লাইন শেল এবং গ্রাফিকাল শেল।
৫. ফাইল সিস্টেম (File System):
ফাইল সিস্টেম হল অপারেটিং সিস্টেমের একটি অংশ, যা ডেটা স্টোরেজ এবং ডেটা অ্যাক্সেসের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি ডেটা গুলিকে ফাইল এবং ডিরেক্টরির আকারে সাজিয়ে রাখে এবং বিভিন্ন ধরনের ফাইল অপারেশন যেমন তৈরি, মুছে ফেলা, আপডেট করা ইত্যাদির অনুমতি দেয়।
৬. মেমরি ম্যানেজমেন্ট (Memory Management):
মেমরি ম্যানেজমেন্ট হল অপারেটিং সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, যা প্রোগ্রামের জন্য প্রয়োজনীয় মেমরি বরাদ্দ করে এবং মেমরির ব্যবহার পর্যবেক্ষণ করে। এটি মূলত ফিজিক্যাল মেমরি এবং ভার্চুয়াল মেমরির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে।
৭. প্রসেস ম্যানেজমেন্ট (Process Management):
প্রসেস হল এমন একটি প্রোগ্রাম যা কার্যকর অবস্থায় থাকে। অপারেটিং সিস্টেম প্রসেস ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমে প্রসেসগুলি পরিচালনা করে, যেমন প্রসেস তৈরি করা, তাদের স্থগিত রাখা, তাদের সময় ভাগ করা ইত্যাদি।
৮. ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট (Device Management):
ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট অপারেটিং সিস্টেমের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি বিভিন্ন ইনপুট/আউটপুট ডিভাইস যেমন কীবোর্ড, মাউস, প্রিন্টার ইত্যাদি পরিচালনা করে এবং তাদের সাথে সম্পর্কিত ড্রাইভারগুলির মাধ্যমে কাজ করে।
৯. ইনপুট/আউটপুট সিস্টেম (I/O System):
ইনপুট এবং আউটপুট কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অপারেটিং সিস্টেম I/O ম্যানেজমেন্ট ব্যবহার করে। এটি মূলত ইনপুট ডিভাইস থেকে ডেটা গ্রহণ এবং আউটপুট ডিভাইসে ডেটা পাঠানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।
১০. নেটওয়ার্ক ম্যানেজমেন্ট (Network Management):
নেটওয়ার্ক ম্যানেজমেন্ট একটি অপারেটিং সিস্টেমের অংশ, যা নেটওয়ার্ক সংক্রান্ত কাজ পরিচালনা করে, যেমন ডেটা ট্রান্সমিশন, প্যাকেট সুইচিং ইত্যাদি। এটি বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস যেমন রাউটার, সুইচ ইত্যাদি ব্যবস্থাপনা করে।
অপারেটিং সিস্টেমের স্ট্রাকচার বিভিন্ন উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত, যা একসাথে মিলে একটি সিস্টেমকে দক্ষতার সাথে পরিচালনা করে। প্রতিটি উপাদান একে অপরের সাথে সম্পর্কিত এবং তারা একসাথে কাজ করে একটি স্থিতিশীল এবং কার্যকরী সিস্টেম তৈরি করে।
সিস্টেমের কাঠামো: মনোলিথিক, মাইক্রোকার্নেল, লেয়ার্ড, এবং মডুলার সিস্টেম
সফটওয়্যার সিস্টেম ডিজাইনে বিভিন্ন ধরনের কাঠামো ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে মনোলিথিক, মাইক্রোকার্নেল, লেয়ার্ড, এবং মডুলার সিস্টেম উল্লেখযোগ্য। এই সিস্টেমগুলোর প্রতিটিরই নিজস্ব সুবিধা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে। নিচে প্রতিটি সিস্টেমের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
১. মনোলিথিক সিস্টেম (Monolithic System)
মনোলিথিক সিস্টেমে সমস্ত সিস্টেমের কার্যাবলী একক ইউনিটে একত্রিত করা হয়। অপারেটিং সিস্টেমের সমস্ত ফাংশন একটি বড় প্রোগ্রামে একত্রিত থাকে এবং সেই প্রোগ্রামটি কার্নেলের অংশ হিসেবে কাজ করে। মনোলিথিক সিস্টেমের বৈশিষ্ট্যসমূহ হলো:
- বৈশিষ্ট্য: সব ফাংশন একত্রে কাজ করে এবং একে অপরের উপর নির্ভরশীল।
- সুবিধা: দ্রুত কর্মক্ষমতা, কারণ সমস্ত সিস্টেম কম্পোনেন্ট একত্রে সংযুক্ত থাকে।
- অসুবিধা: একক সিস্টেমের ত্রুটি পুরো সিস্টেমে প্রভাব ফেলতে পারে এবং মেইনটেনেন্স কঠিন হয়।
২. মাইক্রোকার্নেল সিস্টেম (Microkernel System)
মাইক্রোকার্নেল সিস্টেমে, কার্নেলটির আকার ছোট রাখা হয় এবং শুধুমাত্র মৌলিক ফাংশনগুলো (যেমন মেমোরি ম্যানেজমেন্ট, প্রসেস ম্যানেজমেন্ট) কার্নেলে থাকে। অন্যান্য ফাংশনগুলো কার্নেলের বাইরে থাকে এবং ইউজার মোডে রান করে।
- বৈশিষ্ট্য: কার্নেলের আকার ছোট, এবং ফাংশনগুলো বাইরের সার্ভিস হিসেবে কাজ করে।
- সুবিধা: উচ্চ নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা, কারণ কার্নেলের বাইরের প্রক্রিয়াগুলি কার্নেলের ক্ষতি করতে পারে না।
- অসুবিধা: পারফরমেন্স কিছুটা ধীর হতে পারে, কারণ ফাংশনগুলোর মধ্যে বেশি কমিউনিকেশন প্রয়োজন।
৩. লেয়ার্ড সিস্টেম (Layered System)
লেয়ার্ড সিস্টেমে সিস্টেমটি বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত থাকে। প্রতিটি স্তরের নিজস্ব ফাংশন থাকে এবং উপরের স্তরগুলি নিচের স্তরের উপর নির্ভর করে। প্রতিটি স্তর একটি নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করে এবং একটি অন্যটির সাথে যোগাযোগ করতে পারে না।
- বৈশিষ্ট্য: প্রতিটি স্তর নির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন করে এবং ক্রমানুসারে কাজ করে।
- সুবিধা: মডুলারিটি এবং সহজ মেইনটেনেন্স। প্রতিটি স্তর আলাদা থাকে, তাই একটি স্তরের পরিবর্তন অন্য স্তরে প্রভাব ফেলে না।
- অসুবিধা: কিছু কাজের জন্য পারফরমেন্স ধীর হতে পারে, কারণ এক স্তরের ফাংশন অন্য স্তরের উপর নির্ভর করে।
৪. মডুলার সিস্টেম (Modular System)
মডুলার সিস্টেমে, সিস্টেমটি বিভিন্ন মডিউলে বিভক্ত থাকে। প্রতিটি মডিউল স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে এবং অন্য মডিউলগুলোর সাথে যোগাযোগ করতে পারে। এটি সিস্টেমকে সহজেই পরিবর্তন ও সম্প্রসারণ করার সুযোগ দেয়।
- বৈশিষ্ট্য: প্রতিটি মডিউল আলাদাভাবে কাজ করে এবং একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
- সুবিধা: উচ্চ ফ্লেক্সিবিলিটি, সহজ আপগ্রেড এবং মডিউলগুলির স্বাধীন কার্যকারিতা।
- অসুবিধা: মডিউলগুলির মধ্যে সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা থাকতে পারে, যা সিস্টেম জটিল করতে পারে।
মনোলিথিক, মাইক্রোকার্নেল, লেয়ার্ড, এবং মডুলার সিস্টেম প্রতিটি ভিন্ন ধরনের সিস্টেম ডিজাইন পদ্ধতি প্রদর্শন করে। মনোলিথিক সিস্টেম উচ্চ পারফরমেন্স সরবরাহ করে, কিন্তু জটিল এবং মেইনটেনেন্স কঠিন। মাইক্রোকার্নেল সিস্টেম নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতায় ভালো, কিন্তু কিছুটা ধীর হতে পারে। লেয়ার্ড সিস্টেম সহজে মেইনটেন করা যায়, কিন্তু পারফরমেন্স কিছুটা কম হতে পারে। মডুলার সিস্টেম সর্বাধিক ফ্লেক্সিবিলিটি প্রদান করে, তবে মডিউলগুলোর সমন্বয় কঠিন হতে পারে।
অপারেটিং সিস্টেম পরিষেবাগুলি
অপারেটিং সিস্টেম (Operating System বা OS) একটি গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার যা কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এবং ব্যবহারকারীর মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে। এটি বিভিন্ন পরিষেবা সরবরাহ করে, যা ব্যবহারকারীদের এবং সিস্টেমের মধ্যে সহজতর যোগাযোগ নিশ্চিত করে। অপারেটিং সিস্টেমের প্রধান পরিষেবাগুলি নিচে বিশদে আলোচনা করা হলো:
১. প্রক্রিয়া ব্যবস্থাপনা (Process Management):
প্রক্রিয়া ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবা যেখানে অপারেটিং সিস্টেম প্রক্রিয়াগুলি তৈরি, পরিচালনা এবং বন্ধ করার কাজ করে। একাধিক প্রক্রিয়া একসঙ্গে কাজ করতে পারে, তাই OS নির্ধারণ করে কোন প্রক্রিয়া কখন চলবে এবং কত সময় CPU ব্যবহার করবে।
২. মেমরি ব্যবস্থাপনা (Memory Management):
মেমরি ব্যবস্থাপনা পরিষেবা অপারেটিং সিস্টেমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এটি RAM এর সঠিক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে, কোন প্রোগ্রাম কতটুকু মেমরি পাবে এবং কোন প্রোগ্রামটি মেমরি থেকে সরানো হবে তা নিশ্চিত করে।
৩. ফাইল সিস্টেম ব্যবস্থাপনা (File System Management):
ফাইল সিস্টেম ব্যবস্থাপনা পরিষেবার মাধ্যমে অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীকে ফাইল তৈরি, সম্পাদনা এবং সংরক্ষণ করতে সহায়তা করে। এটি ফাইলের ডিরেক্টরি, অনুমতি এবং স্টোরেজ ব্যবস্থাপনা করে।
৪. ডিভাইস ব্যবস্থাপনা (Device Management):
অপারেটিং সিস্টেম বিভিন্ন ইনপুট এবং আউটপুট ডিভাইস (যেমন: কীবোর্ড, মাউস, প্রিন্টার) ব্যবস্থাপনা করে। OS ডিভাইস ড্রাইভার ব্যবহার করে হার্ডওয়্যারগুলির সাথে সংযোগ স্থাপন করে এবং কার্যকরভাবে ডেটা আদান-প্রদান করে।
৫. ইন্টারফেস (User Interface):
অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য একটি ইন্টারফেস সরবরাহ করে, যা গ্রাফিকাল ইউজার ইন্টারফেস (GUI) বা কমান্ড লাইন ইন্টারফেস (CLI) হতে পারে। GUI ব্যবহারকারীদের মাউস এবং আইকনের মাধ্যমে কাজ করতে দেয়, আর CLI কীবোর্ডের মাধ্যমে কমান্ড গ্রহণ করে।
৬. নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা (Security Management):
নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা পরিষেবা ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য এবং ফাইল সুরক্ষিত রাখে। এটি ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করে এবং সিস্টেমে অবৈধ প্রবেশ প্রতিরোধ করে।
৭. নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা (Networking Management):
অপারেটিং সিস্টেম বিভিন্ন নেটওয়ার্কিং টাস্ক যেমন ডেটা শেয়ারিং, রিসোর্স শেয়ারিং ইত্যাদি পরিচালনা করে। এটি নেটওয়ার্ক প্রোটোকলগুলি ব্যবহার করে একাধিক ডিভাইসের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে।
৮. সিস্টেম কল (System Calls):
অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীদের জন্য একটি API (Application Programming Interface) প্রদান করে, যা ব্যবহারকারী এবং সফটওয়্যার ডেভেলপারদের বিভিন্ন সিস্টেম রিসোর্স এবং পরিষেবা অ্যাক্সেস করতে দেয়। সিস্টেম কল এর মাধ্যমে প্রোগ্রামগুলি অপারেটিং সিস্টেমের বিভিন্ন কাজ সম্পন্ন করতে পারে, যেমন: ফাইল অ্যাক্সেস, মেমরি বরাদ্দ ইত্যাদি।
অপারেটিং সিস্টেমের এই পরিষেবাগুলি সমগ্র সিস্টেমের কার্যকারিতা এবং দক্ষতা বৃদ্ধি করে, যা ব্যবহারকারীর জন্য একটি সহজ এবং দক্ষ কাজের পরিবেশ তৈরি করে।
ব্যবহারকারী এবং অপারেটিং সিস্টেমের ইন্টারফেস
অপারেটিং সিস্টেম (OS) এবং ব্যবহারকারীর মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যমকে বলা হয় ইউজার ইন্টারফেস (UI)। এটি ব্যবহারকারী এবং কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের মধ্যে একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। ইউজার ইন্টারফেস কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের কম্পিউটারের বিভিন্ন প্রোগ্রাম, ফাইল ও অপারেশন পরিচালনা করতে সাহায্য করে।
অপারেটিং সিস্টেমের ভূমিকা
অপারেটিং সিস্টেম হলো একটি সফটওয়্যার যা কম্পিউটার হার্ডওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। এটি নিম্নলিখিত কাজগুলো করে:
1. রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট: CPU, মেমোরি, স্টোরেজ ডিভাইস এবং ইনপুট/আউটপুট ডিভাইসগুলির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে।
2. প্রসেস ম্যানেজমেন্ট: বিভিন্ন প্রোগ্রামের কার্যক্রম পরিচালনা করে।
3. ফাইল ম্যানেজমেন্ট: ফাইল সংরক্ষণ, পরিচালনা এবং প্রত্যাহার করার কাজ করে।
4. ইনপুট এবং আউটপুট ম্যানেজমেন্ট: কীবোর্ড, মাউস, প্রিন্টার এবং মনিটরের মত ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইসগুলির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে।
ইউজার ইন্টারফেসের ধরন
১. কম্যান্ড লাইন ইন্টারফেস (CLI):
CLI হলো এক ধরনের ইন্টারফেস যেখানে
ব্যবহারকারী কীবোর্ড ব্যবহার করে কমান্ড ইনপুট দিয়ে কম্পিউটারের সঙ্গে যোগাযোগ
করে। ব্যবহারকারী কমান্ড টাইপ করে, এবং অপারেটিং সিস্টেম সেই কমান্ড
সম্পাদন করে। উদাহরণ: MS-DOS, Unix।
২. গ্রাফিকাল ইউজার ইন্টারফেস (GUI):
GUI হলো ব্যবহারকারী-বান্ধব ইন্টারফেস, যেখানে আইকন, মেনু, এবং উইন্ডো ব্যবহার করে অপারেটিং সিস্টেমের সঙ্গে যোগাযোগ
করা যায়। মাউস এবং কীবোর্ডের মাধ্যমে ব্যবহারকারী কম্পিউটারের সঙ্গে সহজে কাজ
করতে পারেন। উদাহরণ: Windows, macOS, Linux এর বিভিন্ন ডিস্ট্রিবিউশন।
৩. ভয়েস ইউজার ইন্টারফেস (VUI):
VUI হলো এমন একটি ইন্টারফেস যেখানে
ব্যবহারকারী কণ্ঠের মাধ্যমে কম্পিউটারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। উদাহরণ: Apple Siri, Google Assistant, Amazon Alexa।
ইউজার এবং অপারেটিং সিস্টেমের ইন্টারঅ্যাকশন
ব্যবহারকারী অপারেটিং সিস্টেমের মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করতে পারে যেমন:
- ফাইল তৈরি ও সংরক্ষণ
- প্রোগ্রাম চালানো
- ইন্টারনেট ব্রাউজিং
- মিউজিক ও ভিডিও প্লে করা
এই ইন্টারফেসের মাধ্যমে ব্যবহারকারী কম্পিউটারের সমস্ত কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন। GUI এবং CLI উভয়ই বিভিন্ন ধরণের ব্যবহারকারীর প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করে।
অপারেটিং সিস্টেম এবং ব্যবহারকারী ইন্টারফেস একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ যা ব্যবহারকারীদের কম্পিউটারের কার্যক্ষমতা সহজ এবং কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে সহায়তা করে। GUI ব্যবহারকারীদের জন্য বেশি সহজ এবং পরিচিত হলেও CLI অভিজ্ঞ ব্যবহারকারীদের জন্য আরও ক্ষমতাশালী এবং নির্দিষ্ট কার্যাবলীতে দক্ষ হতে পারে।
সিস্টেম কল এবং তার ধরনসমূহ
সিস্টেম কল কী?
সিস্টেম কল হলো একটি প্রোগ্রাম এবং অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম। যখন কোনো প্রোগ্রাম তার কাজ সম্পন্ন করতে অপারেটিং সিস্টেমের কোনো সেবা বা রিসোর্সের প্রয়োজন হয়, তখন প্রোগ্রামটি সিস্টেম কলের মাধ্যমে সেই সেবার জন্য অনুরোধ করে। এটি মূলত একটি ফাংশন যা অপারেটিং সিস্টেমের কোর বা কার্নেলকে কল করে।
সিস্টেম কলের কার্যপ্রণালী:
সাধারণত, ইউজার মোডে চলা প্রোগ্রামগুলো সরাসরি অপারেটিং সিস্টেমের কার্নেলের রিসোর্সে অ্যাক্সেস করতে পারে না। তাই, যখন প্রোগ্রামটি কোনো বিশেষ ফাইল বা ডিভাইসের অ্যাক্সেস চায়, তখন প্রোগ্রামটি একটি সিস্টেম কল ব্যবহার করে। সিস্টেম কল প্রোগ্রামটিকে ইউজার মোড থেকে কার্নেল মোডে স্থানান্তরিত করে এবং তারপর প্রয়োজনীয় কাজটি সম্পন্ন করে।
সিস্টেম কলের ধরনসমূহ:
সিস্টেম কলের বিভিন্ন ধরন রয়েছে, এবং প্রতিটি ধরন বিভিন্ন কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়। প্রধানত, সিস্টেম কলগুলো পাঁচটি ক্যাটেগরিতে ভাগ করা যায়:
1. প্রসেস নিয়ন্ত্রণ (Process Control): এই ধরনের সিস্টেম কল প্রসেস তৈরি, সম্পন্ন, এবং পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ:
o
fork()
: নতুন প্রসেস
তৈরি করে।
o
exit()
: প্রসেস বন্ধ
করে।
o
exec()
: নতুন
প্রোগ্রাম লোড করে এবং বিদ্যমান প্রসেসটি পরিবর্তিত হয়।
2. ফাইল ব্যবস্থাপনা (File Management): ফাইল খোলা, বন্ধ করা, পড়া, লেখা, এবং মুছে ফেলার জন্য ফাইল ব্যবস্থাপনা সিস্টেম কল ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ:
o
open()
: কোনো ফাইল
খোলে।
o
read()
: ফাইল থেকে
ডেটা পড়ে।
o
write()
: ফাইলের মধ্যে
ডেটা লেখে।
o
close()
: ফাইল বন্ধ
করে।
3. ডিভাইস ব্যবস্থাপনা (Device Management): ডিভাইস থেকে ইনপুট বা আউটপুট সংগ্রহ করতে বা ডিভাইস কনফিগার করতে ডিভাইস ব্যবস্থাপনা সিস্টেম কল ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ:
o
ioctl()
: ডিভাইস
নিয়ন্ত্রণ করে।
o
read()
, write()
: ডিভাইসের
সঙ্গে ডেটা আদান-প্রদান করে।
4. তথ্য রক্ষণাবেক্ষণ (Information Maintenance): এই সিস্টেম কলগুলো ব্যবহৃত হয় সিস্টেম সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ বা পরিবর্তন করতে। উদাহরণ:
o
getpid()
: চলমান
প্রসেসের আইডি ফিরে দেয়।
o
alarm()
: টাইমার সেট
করে।
o
gettimeofday()
: সিস্টেমের
বর্তমান সময় প্রদান করে।
5. যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ (Communication Control): বিভিন্ন প্রসেসের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা করার জন্য এই ধরনের সিস্টেম কল ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ:
o
pipe()
: দুটি
প্রসেসের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে।
o
shmget()
: শেয়ার্ড
মেমরি তৈরি করে।
o
send()
, recv()
: নেটওয়ার্কের
মাধ্যমে ডেটা আদান-প্রদান করে।
সিস্টেম কলগুলো অপারেটিং সিস্টেম এবং প্রোগ্রামের মধ্যে অপরিহার্য একটি সংযোগ তৈরি করে, যা প্রোগ্রামগুলোর কার্যকারিতা এবং সিস্টেমের রিসোর্স ব্যবহারের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে। সিস্টেম কলের বিভিন্ন ধরন প্রোগ্রামকে বিভিন্ন ধরনের কাজ সম্পন্ন করতে সাহায্য করে, যেমন ফাইল পরিচালনা, ডিভাইসের সাথে কাজ করা, প্রসেস পরিচালনা, এবং প্রসেসগুলোর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করা।
অপারেটিং সিস্টেম ডিজাইন এবং বাস্তবায়ন
অপারেটিং সিস্টেম (OS) একটি সফটওয়্যার সিস্টেম যা হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার রিসোর্সগুলির মধ্যে সমন্বয় সাধন করে এবং ব্যবহারকারীদের জন্য সুবিধাজনক ইন্টারফেস প্রদান করে। এটি কম্পিউটারের কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং বিভিন্ন প্রোগ্রাম ও প্রসেসগুলির মধ্যে সমন্বয় রক্ষা করে।
ডিজাইন
অপারেটিং সিস্টেমের ডিজাইন প্রক্রিয়া বিভিন্ন স্তরের অন্তর্ভুক্ত:
1. অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেস (API):
o OS ডিজাইন করার সময় প্রথমে এটি নিশ্চিত করতে হয় যে API গুলি পরিষ্কার, সুসংহত এবং সহজে ব্যবহারযোগ্য। API গুলি ব্যবহারকারীর এবং প্রোগ্রামের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম।
2. কার্যকরী স্তর (Kernel):
o অপারেটিং সিস্টেমের মূল অংশ হলো কনসোল, যা কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে। কার্যকরী স্তরটি প্রসেস পরিচালনা, মেমরি পরিচালনা, এবং ডিভাইস পরিচালনার জন্য দায়ী।
3. সিস্টেম আর্কিটেকচার:
o OS ডিজাইন করার সময় সিস্টেমের আর্কিটেকচার (যেমন মডিউলার, লেয়ারড) ঠিক করতে হয়। এটি বিভিন্ন মডিউলগুলির মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে এবং সফটওয়্যার উন্নয়নকে সহজ করে।
বাস্তবায়ন
অপারেটিং সিস্টেমের বাস্তবায়ন একটি জটিল প্রক্রিয়া যা নিচের পদক্ষেপগুলি অন্তর্ভুক্ত করে:
1. কোডিং:
o ডিজাইন অনুযায়ী কোড লেখা হয়। এখানে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষা যেমন C, C++, Assembly ব্যবহার করা হয়।
2. টেস্টিং:
o কোড লেখার পর এটি পরীক্ষা করা হয় বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কিভাবে এটি কাজ করছে তা নিশ্চিত করার জন্য। এটি ডিবাগিং এবং সমস্যার সমাধান করতে সহায়ক।
3. ডেপ্লয়মেন্ট:
o পরীক্ষায় সফল হলে অপারেটিং সিস্টেমটি ব্যবহারকারীদের জন্য প্রস্তুত করা হয়। এটি সাধারণত বিভিন্ন হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে পরীক্ষা করা হয়।
4. রক্ষণাবেক্ষণ:
o OS বাস্তবায়নের পর তার সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখতে নিয়মিত আপডেট ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন। ব্যবহারকারীদের অভিযোগ এবং সমস্যা সমাধানে কাজ করা হয়।
অপারেটিং সিস্টেম ডিজাইন এবং বাস্তবায়ন হল একটি জটিল প্রক্রিয়া, যা সঠিক পরিকল্পনা, দক্ষতা এবং প্রযুক্তির প্রয়োজন। আধুনিক প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে অপারেটিং সিস্টেমের ডিজাইন এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ তৈরি হচ্ছে।
|
|
|
Comments
Post a Comment